রুবাইয়াত হোসেন নির্মিত মেহেরজান ছবিটি ১৯৭১ সালের পটভূমি নিয়ে রচিত। ছবিটিতে মূলত দেখানো হয়েছে একজন বাঙালি নারী মেহেরজানের সাথে পাকিস্হানি এক পলাতক সেনা ওয়াসিমের প্রেম কাহিনী।
একটা রোমান্টিক কাহিনী! অথচ মুক্তিযুদ্ধে নির্যাতিত হওয়া লক্ষ লক্ষ নারীর আর গনহত্যার কোন চিত্র তিনি ছবিটিতে ফুটিয়ে তোলেন নি। মেহেরের ছোট বোন নীলা পাকিস্হানি ক্যাম্পে নির্যাতিত ও ধর্ষিত হয়, এ দৃশ্য দেখেও পাকিস্হানিটার সাথে মেহেরজানের ফ্যান্টাসীতে বাঁধে না। রুবাইয়াতের কথা অনুযায়ী একটা যুদ্ধবিদ্ধস্ত দেশেও ভালবাসা মরে যায় না, অপরকে ভালবাসার দৃষ্টান্ত স্হাপন করতেই মেহেরজান ছবির জন্ম।
পরিচালক সব জায়গায় গীত গাইছেন তার মুক্তিযুদ্ধের প্রতি ভালবাসার কথা। কিন্তু যুদ্ধের সময় মানুষের ত্যাগ আর সাহসের পরিচয় তুলে ধরতে উনি পুরোপুরি ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন। ছবিটি এ প্রজন্মের মানুষদের পাকিস্হানী বাহিনীর ভয়বহতা ও নিষ্ঠুরতা সম্পর্কে কোন ধারণা দিতে পারে নি। বরং ভালবাসার কাহিনী দিয়ে উনি এক পাকিস্হানীকে ভাল সাজানোর চেষ্টা করেছেন। একজন ন্যাকা হিসেবে তুলে ধরেছেন মেহেরজানকে যে বিছানায় কাত হয়ে শুয়ে ডায়রির সাথে ন্যাকামি করে, দেশে কেন যুদ্ধ হচ্ছে, মুক্তিযুদ্ধ কেন সে সময়ের দাবী ছিল, এসব কোনকিছুই তার জানার বা বোঝার আগ্রহ নেই, বরং বারবার বলে চলে, যুদ্ধ তার পছন্দ নয়। বামপন্থী রাজনীতি কী ও কেন, কেন মস্কোপন্থী আর চীনপন্থীর বিভাজন এসব নিয়েও তার কোন আগ্রহ নেই। সবকিছুর উপরে পরিচালক প্রেম আর ভালবাসাকেই স্হান দিয়েছেন।
রুবাইয়াত নিজেকে নারীবাদী অ্যাখ্যা দিয়ে বেড়ান সবজায়গায়, উনি নাকি মেহেরজানকে একজন বিরঙ্গনা হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করেছেন। ডেইলিস্টারে দেওয়া তার একটা কোটেশন দেখুন-
“Even though I wanted to highlight the Birangonas, the violence of rape, and the indifference towards female experiences of war, I strongly felt that the film had to end on a positive note. I wanted my film to heal the wounds of 1971.”
কতবড় নিকৃষ্ট আর জানোয়ার এই ব্যাটা! কতবড় মিথ্যাচার!! একটা কাপুরুষ ফার্মের মুরগী। অনেকেই দেখি আবার তার পক্ষে সাফাই গাইছেন, যুক্তি দেখাচ্ছেন। পাকিস্হানী আর রাজাকারদের নিয়ে কোন যুক্তি খাটে না। যারা যুক্তিবাদী ছিলেন তার ঐ সময় যুদ্ধ করেননি, ঘোরের কোনায় বসে ডিমে তা দিছেন আর রক্ত দিছেন আবেগপ্রবণ বাঙালিরা। বাঙালি আবেগের জাতি আর আমরা এ নিয়ে গর্বিত।
Pingback:মেহেরজান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী….. | স্বপ্নবাজের ব্লগ
মেহেরজান এখনও দেখা হয় নি, এত বিতর্কিত সিনামা না দেখায় আফসোস হচ্ছে।
তবে প্রদর্শনী বন্ধ করে দেওয়াটা মনে হয় ভাল হয় নি।
Pingback:মেহেরজান প্রসঙ্গে ব্লগ ও অন্যান্য মাধ্যমে প্রকাশিত লেখার আর্কাইভ | নীড়পাতা