তীব্র গণ আন্দোলনের মুখে এক মাসও টিকতে পারলেন না দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে ক্ষমতা ধরে রাখা মিশরের প্রেসিডেন্ট হোসনি মোবারক। শুক্রবার সন্ধ্যায় মিশরের ভাইস প্রেসিডেন্ট জাতীয় টেলিভিষণে এক বিবৃতিতে মুবারকের পদত্যাগের ঘোষণা দেন।
হোসনি মোবারকের পদত্যাগের দাবিতে ২৫ শে জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া গনআন্দলনে এ পর্যন্ত প্রাণ দেন আনুমানিক ২৯৬ জন।
সংস্কার ও মুবারকের পদত্যাগের দাবীতে বিরোধী রাজনৈতিক দল মুসলিম ব্রাদারহুড আন্দোলনের সূচনা করেন। এরপর ২৫ শে জানুয়ারি থেকে রাস্তায় নামেন হাজার হাজার মানুষ। এ কয়দিন মোবারক অনেকভাবেই আন্দোলন দমানোর চেষ্টা করেছেন। প্রথমে রাস্তায় নামিয়েছেন পুলিশ, পুলিশের বাঁধায় আন্দোলন আরো জোড়দার হয়। এরপর ২৮ শে জানুয়ারী শহরগুলোতে কারফিউ জারি করা হয়। মানুষ কারফিউ ভেঙ্গে কায়রোতে আন্দোলন করে। পরিস্হিতি শান্ত করতে ২৯ শে জানুয়ারী মন্ত্রীসভা ভেঙ্গে দেন মোবারক, নতুন ভাইস প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় যথাক্রমে ওমর সুলায়মান ও আহমেদ শফিককে। মোবারক আগামী সেপ্টম্বরে জাতীয় নির্বাচন দেওয়ার ঘোষণা দেন এবং আরও জানান যে তিনি এ নির্বাচনে অংশগ্রহন করবেন না। তবুও আন্দোলন শান্ত হয় না। এরপর ৫ই ফেব্রুয়ারি তার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির শীর্ষ নেতৃত্বে পরিবর্তন আনেন তিনি। তার ছেলে গামাল ও অন্যান্য শীর্ষ নেতারা পদত্যাগ করেন। এরপর সকল সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন ১৫ শতাংশ বাড়ানোর ঘোষণা দেন। তাতেও কোন লাভ হয় না, আন্দোলন চলতেই থাকে।
গত বৃহশ্পতিবার এক ভাষণেও মুবারক আগামী সেপ্টেম্বরে নির্বাচন দিয়ে তিনি ক্ষমতা ছাড়বেন এ কথা বলেন। এ ঘোষণায় আন্দোলন আরও জোড়দার হওয়ায় শুক্রবার তিনি শেষপর্যন্ত ক্ষমতা ছাড়লেন। সামরিক বাহিনীর হাতে সাময়িকভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হয়। মিশরের কায়রোতে লাখ লাখ মানুষ এখন আনন্দ উল্লাস করছে।