দশ লক্ষ মানুষের মনের ক্ষোভ, দাবী, বিক্ষোভকে মনে হয় সরকার রাজনীতিতে রূপান্তর করার চেষ্টায় আছে। গতকাল জনতা পুলিশ সংঘর্ষে একজন পুলিশ নিহত হওয়ার ঘটনায় খালেদা জিয়া সহ মোট ২৫ হাজার জনকে আসামী করে চারটি মামলা দেওয়া হয়েছে। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা দেওয়ায় বিএনপি ইতিমধ্যেই আন্দোলনে নেমে পড়েছে, সরকারকে ২৪ ঘন্টা ঘন্টার আলটিমেটাম দেয়া হয়েছে, বিভিন্ন জায়গায় তারা বিক্ষোভ ভাংচুর শুরু করেছেন। এদিকে সরকারের নীতিনির্ধারকরা মনে হয় গোফে তা দেওয়া শুরু করেছেন, সবকিছু তাদের পরিকল্পনা মতো হচ্ছে!! আড়িয়াল বিলের বিমানবন্দর থেকে মানুষের নজর এখন অন্য দিকে যাচ্ছে!
যেকোন মূল্যে আড়িয়াল বিলের জনবসতি উচ্ছেদ করে বঙ্গবন্ধু বিমানবন্দর বানাবেই, এমন পরিকল্পনা করে থাকলে সরকারকে এর মূল্য অবশ্যই দিতে হবে। জনগনের জীবন নিয়ে, অন্ন, বাসস্হান নিয়ে সরকার রাজনীতি করতে চাইলে সাধারণ জনগন কখনোই তা মেনে নেবে না। জনগন এখন অনেক সচেতন, এসব মোটা রাজনীতি সবাই এখন বুঝে।
দশ লক্ষ মানুষের ভবিষ্যৎ বনাম বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সাথে একটা উপশহর। মানুষের ভবিষ্যতের কথা বাদ দিলেও এত বড় একটা জলাভূমি ধ্বংসের পরিনতি যে বাংলাদেশের প্রকৃতিক পরিবেশের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলবে তা আমরা বিভিন্ন পরিবেশবিদদের থেকে জেনেছি। ২৫,০০০ একর জলাশয় আর বাসস্হান ভরাট করে বিমানবন্দর বানানোর প্রজেক্ট অত্যন্ত ব্যয়বহূল । দেশে তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, কক্সবাজর বিমানবন্দরকেও আন্তর্জাতিক মানে রূপদানের চেষ্টা চলছে, এগুলোর একটাতেও ধারণক্ষমতার তুলনার কাছাকাছি বিমান ওঠানামা করে না, যাত্রীও বেশি একটা পাওয়া যায় না। এ অবস্হায় আরো একটা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কতটা যুক্তিযুক্ত! এ বিষয়ে ব্লগগুলোতে আর পত্রিকাগুলোতে কয়দিনে অনেক বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
বঙ্গবন্ধুর নামে বিমানবন্দর নাই, কোন উপশহর নাই, সরকার কি এ কারণেই বঙ্গবন্ধুর নামে সবচেয়ে বড় আর প্রধান বিমানবন্দর বানানোর জন্য এত মরিয়া! এতে অবশ্য মন্ত্রী এম.পি দের পকেটে কোটি কোটি টাকা ঢুকবে এজন্যেও তারা কিছুটা মরিয়া! জনগনের চোখের পানি, ক্ষোভ, আবেগ, জীবন, দেশ তাদের কাছে বড় না!!
আশা করি সরকার এ বিষয়ে একটা ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিবেন। বিমানবন্দর যদি করতেই হয় তারা আড়িয়াল বিল থেকে সরিয়ে অন্য কোথাও বানানোর ব্যবস্হা করবেন। আমরা এ ঘটনায় আর কোন লাশ দেখতে চাই না, রক্ত চাই না। সবাই এ ব্যাপারে আশা করি একটু সোচ্চার হবো, সরাসরি বিক্ষোভ করতে না পারলেও অন্তত্ব লেখালেখি, সমালোচনার মাধ্যমে প্রতিবাদ করি। ফেসবুকে একটা গ্রুপ খোলা হয়েছে, সবাই যোগ দিবেন আশা করি- আড়িয়াল বিলে বিমানবন্দরের বিরুদ্ধে রুখে দাড়ান।
আড়িয়াল বিলের মানুষদের জন্য শুভকামনা।
সরকারের কাজকর্ম দেখে মনে হচ্ছে তারা আড়িয়াল বিলে বঙ্গবন্ধু বিমানবন্দরের
জনতা পুলিশের সংঘর্ষে গতকাল একজন পুলিশ মারা গেছেন। কয়দিন কয়েকশ মানুষ আহত হয়েছেন। আজ
আশা করি আড়িয়াল বিলে বঙ্গবন্ধু বিমানবন্দর তৈরির কার্যক্রম খুব দ্রুত বন্ধ করে দেবে সরকার।
ব্যাপারটাকে গুরুত্ব না দিলে পরিস্হিতি আরও ঘোলাটে হবে, অন্য রাজনৈতিক দলগুলোও একটা অস্হিতিশীল পরিস্হিতি তৈরির চেষ্টা করবে। যতক্ষণ পর্যন্ত এই কার্যক্রম বন্ধ না হবে ততক্ষণ জনগন, সরকার,দেশ,পরিবেশ সবার ক্ষতি।
ফেসবুকের গ্রুপটায় যোগ দিলাম। লেখাটার জন্য ধন্যবাদ।
শেখ হাসিনা অবশেষে আড়িয়াল বিলে বিমানবন্দর তৈরির কার্যক্রম স্হগিত রেখেছেন। বিরোধীদল সহ সাধারন মানুষদের নামে যে মামলাগুলো দেওয়া হয়েছিল সেগুলোও তুলে নেওয়া হয়েছে। তবে অনেক ক্ষয়ক্ষতি আর একটা প্রাণের বিনিময়ে।