তখনও অনুষ্ঠান শেষ হয়নি । প্রগতিশীল ছাত্র জোট আয়োজিত “Our campus Our Right” বিষয়ক একটি সেমিনারের শেষে প্রশ্ন উত্তর পর্ব চলছে । অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করছিলেন রংপুর জেলা ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি রাশে-দুল ইসলাম (বাবু)। আমার উপর দায়িত্ব ছিল অনুষ্ঠানের বিষয় ভিত্তিক প্রশ্নের উত্তর দেয়া । প্রশ্নের উত্তরের এক পর্যায়ে বললাম ক্যাম্পাসের সকল বন্ধু-বান্ধবী মিলে ক্যাম্পাসের ভালো-মন্দ দিক নিয়ে আলোচনা করা আমাদের Right । ঠিক তখনেই একটি ছেলে আমার কথা থামিয়ে দিয়ে যুক্তি দেখিয়ে প্রশ্ন করল “ আমরা জানি চুম্বকের বিপরীত মেরু পরস্পরকে সবসময় আকর্ষণ করে, তাহলে বন্ধু-বান্ধবী একসাথে বসে আলোচনা করলে সেখানে অনৈতিক কাজের সম্ভাবনা বেশি থাকবে, এ-টাইকি স্বাভাবিক নয় ?’’ প্রশ্ন শুনে অনুষ্ঠানে আগাত সবাই কিছুক্ষণের জন্য নিস্তব্ধ হয়ে গেল সাথে আমিও । নীরবতা ভেঙ্গে উত্তর দিতে যাব, ঠিক সেই মু-হূতে বাবু ভাই মাউথ-পিচ হাতে আমার পাশে এসে দাঁড়ালেন । দর্শকদের মধ্যে গুঞ্জন উঠলো কেউ কেউ বলছে, ও তো ছাত্র শিবিরের কর্মি, কেউবা বলছে মাদ্রাসার ছাত্র জন্যে অমন কথা বলছে, ওর সাথে আসা একজন বলেই ফেললো, ছিটে বস, তুই নিজে খারাপ জন্যে অন্যকেও খারাপ ভাবিস ।
বাবু ভাই সবার কথা থামিয়ে দিয়ে যে উত্তর দিলেন তার মোদ্দা কথা এই , আমরা বান্ধবীদের বিপরীত কিছু না ভেবে বোন হিসাবে-তো ভাবতে পারি । বাবু ভাইয়ের কথা শুনতে শুনতে ছেলে টিকে লক্ষ করলাম, লম্বায় পাঁচ ফুট ছয় ইঞ্চির মত হবে, স্বাস্থ্যবান, মুখ গোলাকার তবে মুখের খোঁচা খোঁচা দাড়ি যেন কাঁচি দিয়ে যত্ন করে ছাটা , বয়সটা অন্য ছাত্রদের তুলনায় একটু বেশিই মনে হল । গায়ের রঙ্গ ফর্সা হওয়ায় কপালের মৃদু কাল দাগ দেখে বুজতে অসুবিধা হল না সে এক জন পাক্কা নামাজী । ব্লু রঙ্গের জিন্স প্যান্টর সাথে ম্যাচ করে গায়ে হাঁপ হাতা কাল শার্ট পরেছে । দেখে মনে হয় নায়ক, তওবা নায়ক বলা যাবেন না, এ যেন আল্লাহ প্রদত্ত নুরানি চেহারা । এই ঘটনার পর বহুবার ওকে আমাদের ক্যাম্পাসে দেখেছি। ওর নাম গোলাপ । বয়স একটু বেশি হওয়ায় ক্যাম্পাসের ছাত্ররা বুড়ো গোলাপ বলে ডাকে । সে ছাত্র শিবিরের একনিষ্ঠ সাথি ভাই । অবশ্য যতবার তার সাথে আমার দেখা হয়েছে ততবারেই ও স্যালাম দিতে ভোলেনি । কিন্তু যেবার স্যালাম দিতে ব্যতিক্রম হল সেই ঘটনাটা শেষ বসন্তের একটু আগে ঘটল ।
আমাদের ক্যাম্পাসের পাশের মহল্লার একটা বাড়িতে বিচার সালিসে আমন্ত্রণ পাই । আমন্ত্রণ পেতাম না, যদি না আমাদের ক্যাম্পাসের ছেলে ঐ ঘটনায় জড়িত থাকত । সেখানে পৌঁছে গোলাপের চেহারা দেখে আমি সত্যি হতভম্ব হয়ে পরলাম । গোলাপ বাবুর নুরানি মার্কা চেহারা আর নেই । মুখটা কালো ফ্যাকাসে, মাথা নিচু করে কাঁচুমাচু হয়ে চেয়ারের কোনায় বসে আছে । তার বিরুদ্ধে কাজের বুয়া ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে । স্বামী পরিত্যক্তা কাজের বুয়া , বয়স ৩৭ হবে, দেখতে কাল, দু-সন্তানের জননী, কথা বলতে পারেন না (বোবা), সে আকার ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দিচ্ছে এই গোলাপেই তাকে ধর্ষণ করেছে। প্রবাদে আছে বোবার কোন শত্রু নেই (!)। বুঝলাম না শিবিরের বুড়ো গোলাপ তার শত্রু না মিত্র ? অবশ্য দুঃখ জনক হলেও সত্যি যে, গোলাপ অপরাধ সংশ্লিষ্টতা স্বীকার করলেও রংপুর জেলা জামায়েতের নেতাদের হস্ত ক্ষেপের কারণে ১৫০০ টাকায় ঘটনার মীমাংসা হয় ।
ভিক-টিমকে কাজ থেকে ছাটাই করে তার গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয় ।সেই বুড়ো গোলাপ এখনও রংপুর পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের ছাত্র শিবিরের এক দুর্বার সৈনিক । ছাত্র শিবির বা জামায়েতই ইসলামের নেতাদের এই ধরনের ঘটনায় গুলোকে যারা ঘৃণা করেন তারা হয়ত আল্লামা মওদুদীর লেখা বই গুলো পড়েননি । যে বইগুলো জামাত-শিবির নেতা কর্মীরা খুব ভাল করেই তাদের বাস্তব জীবনে অনুশীলন করেন ।আল্লামা মওদুদী লিখেছেন , দাস-দাসী দের সাথে ঘষা ঘষি করা ইসলামে জায়েজ আছে , কারণ তোমরা তাদের অভিভাবক ।তাদের উপর যেমন তোমাদের অধিকার আছে, সেই রকম তাদেরও তোমাদের উপর যৌন হক আছে ।এতে পাপ নেই বরং পুণ্য আছে । নাহ্ শিবিরের একনিষ্ঠ সাথি ভাই গোলাপ, আল্লামা মওদুদীর কথার বরখেলাপ করেন নি, এক স্বামী পরিত্যক্তা বোবা মহিলাকে যৌন সুখ দিয়ে আল্লার নৈকট্য লাভ করেছে । অযথা আমরা জামাত-শিবিরের এই সকল সু-কম গুলোকে (!) ঘৃণা করে আল্লাহর বিরাগ ভাজন হতে যাব কোন্ দুঃখে ? তাই আসুন জামাত-শিবিরের এই সকল সু-কম গুলোকে(!) সমর্থন দিয়ে আল্লার নৈকট্য লাভ করি । (আমিন)
One can understand how strange and unholy the orthodox Islam can be. Possibly Moududi himself was loose to such activities. His interpretation of Islam suggest that. Orthodox Muslims consider Islamic teachings as prescriptive and not descriptive. “Burho Golap” is no exception.